জান্নাতের বর্ণনা ও নিয়ামত
*জান্নাতের নিয়ামত সম্পৃক্ত চিন্তা রাজ্যে ডুব দেওয়া চাই*⬇
☝আল্লাহ্ পাক যে উদ্দেশ্যে আমাদের সৃষ্টি করেছেন সে উদ্দেশ্যকে যদি সামনে রাখা হয় এবং সে উদ্দেশ্য নিয়ে যদি চিন্তা করা হয় তাহলে দেখা যায় যে, অন্তর প্রশান্ত হয় এবং সে উদ্দেশ্য পাণে ছুটা সহজ হয় বরং মজাদার হয়।
☝আল্লাহ্ পাক দুনিয়াতে আমাদের পাঠিয়েছেন যেনো অল্প কিছুদিন আল্লাহ পাককে রাজি খুশি করার জন্য আমরা কষ্ট মুজাহাদা করতে পারি। এরপর আমাদের ইন্তেকাল হয়ে যাবে এবং আল্লাহ্ পাক খুশি হয়ে আমাদের জান্নাত দান করবেন এবং অনন্ত কাল ধরে জান্নাতে নেয়ামত ভোগ করতে থাকবো এবং অনন্ত কাল ধরে আল্লাহ্ পাক তার দিদার আমাদেরকে উপহার দিতে থাকবেন।
জান্নাতের বর্ণনা ও নেয়ামত
🍁জান্নাতের হাজারো লাখো কোটি কোটি নেয়ামত রয়েছে যা আমরা কল্পনাও করতে পারবো না। কিছু নেয়ামতের কথা তো আল্লাহ্ পাক নবিজী *(সাল্লাল্লাহু তা'আলা আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মাধ্যমে আমাদেরকে বলে দিয়েছেন। আরও এমন বহু নেয়ামত আছে যেগুলোর ব্যাপারে আমরা চিন্তাও করতে পারবো না।
🔰আওলিয়া কেরামের এক ছিফত হলো তারা নিয়মিতভাবে চিন্তা রাজ্যে ডুব দেন। এই জান্নাতের বিশাল বড় বড় বাগানে ঘুরা ফেরা করতেছেন, জান্নাতের মনোরম পরিবেশ উপভোগ করতেছেন, দেখতেছেন। গাছের মধ্যে ফল দেখা যাচ্ছে, সেটা পারলেন, খাইতেছেন। পাশ দিয়ে ঝর্ণার পানি কলকল ধ্বনিতে বয়ে যাচ্ছে। সেই পানি হাতে নিয়ে দেখতে লাগলেন। পানির প্রবাহ দেখতে কতোই না সুন্দর লাগতেছে। আবার জান্নাতের বালাখানায় প্রবেশ করলেন। কত সুন্দর বালাখানা, যেটা দুনিয়ার উপমা দিয়ে বলে শেষ করা যাবে না।
জান্নাতের বর্ণনা ও নেয়ামত
☝আল্লাহর প্রেমিকরা কখনও কখনও জাহান্নামের ভীষণ ভয়ংকর কষ্টদায়ক শাস্তির ভাবনাতেও ডুব দেন। দুনিয়ার জীবনের কিছু ছোটো ছোটো মুসিবত যেমন প্রচন্ড গরম অথবা প্রচন্ড শীতের হালতে যখন তারা পড়েন, তখন আল্লাহ্ ওয়ালারা ভাবতে থাকেন যে," দুনিয়ার এই গরম এই শীত, এটাই সহ্য করতে পারি না। আর জাহান্নামের কঠিন ভয়াবহ শাস্তি, সেটা কীভাবে আমি সহ্য করবো! দুনিয়ার পেরেশানির হালতে, মুসিবতের হালতে, কষ্টের হালতে তাদের জাহান্নামের স্মরণ তাজা হয়। তাঁরা ভাবেন, দুনিয়ার এটাই এতো কষ্টকর লাগে, তাহলে আখিরাতে জাহান্নামের কি ভয়াবহ কষ্ট, সেটা আমি কীভাবে বরদাশত করবো! কোনো ভাবেই তো বরদাশত করা সম্ভব না, অতএব আল্লাহ পাকের নাফরমানি আমি মোটেও করবো না।"
☝আল্লাহ্ ওয়ালারা কখনও হাশরের ময়দানে যে ভয়াবহ পরিবেশ পরিস্থিতি হবে, সেটা চিন্তা করতে থাকেন। চিন্তা করতে থাকেন যে, লোকজন সব ভীত সন্ত্রস্ত্র। একজন আরেকজন থেকে পলায়ন করতেছে। পিতা তার ছেলে থেকে পলায়ন করতেছে। ছেলে পিতা থেকে, মাতা থেকে পলায়ন করতেছে। বন্ধু তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু থেকে পলায়ন করতেছে। কেউ কারো কোনো কাজে আসতেছে না। সবাই টেনসন পেরেশানিতে আছে। এদিক সেদিক ছোটাছুটি করতেছে। পালানোর চেষ্টা করতেছে। মানুষ ঘর্মাক্ত, সবাই দিশেহারা ও পেরেশান। অপরদিকে আল্লাহ্ প্রেমিকরা আল্লাহ্ তা'আলার আরশের ছায়ার নিচে জায়গা পেয়েছেন।
জান্নাতের বর্ণনা ও নেয়ামত
❇আবার কখনো আল্লাহ্ ওয়ালারা চিন্তা করেন, পেয়ারা রাসুল *(সাল্লাল্লাহু তা'আলা আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) হাউজে কাওসারের নিকট আছেন। সেখানে পেয়ারা রাসুল *(সাল্লাল্লাহু তা'আলা আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর উম্মতকে হাউজে কাওসার থেকে পানি পান করাইতেছেন। ইত্যাদি হাজারো বিষয় তারা ভাবতে থাকেন, চিন্তা করতে থাকেন। এ চিন্তা করার দ্বারা যে লাভ হয় সেটা হলো, তার রূহ শক্তিশালী হয়। তার রূহ তাগড়া হয় তাজা হয়। তার রূহ আখিরাত মুখি হয়। যখন সে জান্নাতের বিভিন্ন নেয়ামতের রাজ্যে ভ্রমণ করতে থাকে তখন তার আত্মা বলবান হয়, নেক আমল বাড়ানোর জন্য সে উদগ্রীব হয়। কীভাবে আরও বেশি যিকির করা যায়, আরও বেশি তেলাওয়াত করা যায়, আরও বেশি সাধ্যমত দান করা যায় ইত্যাদি।
✅যখন সে জাহান্নামের মোরাকাবা করে, জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি, হাশরের ময়দানের ভয়াবহ অবস্থার কথা যখন সে চিন্তা করে তখন সে ভাবে,"গোনাহ কোনো অবস্থাতেই করা যাবে না। কারণ গোনাহ করলে তো আমার আখিরাত বরবাদ হবে, আমার জাহান্নামে যাওয়া লাগবে।" আর আমি যদি পেয়ারা রাসুল *(সাল্লাল্লাহু তা'আলা আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) এর হাতে হাউজে কাওসার থেকে পানি পান করতে চাই তাহলে অবশ্যই আমার জীবনটাকে প্রিয় রাসুল *(সাল্লাল্লাহু তা'আলা আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সুন্নাত মোতাবেক গঠন করতে হবে। যাতে করে আল্লাহর রাসুল *(সাল্লাল্লাহু তা'আলা আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দেখে মুখ ফিরিয়ে না নেন বরং মুচকি হাসি দেন। এইতো একজন আল্লাহ প্রেমিক মুমিনের হালত।
জান্নাতের বর্ণনা ও নেয়ামত
☪মোরাকাবা অত্যন্ত শক্তিশালী আমল। মানুষ কতো সুন্নতের কথা বলে কিন্তু মোরাকাবা যে কতো বড় সুন্নাত তা অনেকে জানেও না। হাদীসে পাকে এসেছে রাসুল *(সাল্লাল্লাহু তা'আলা আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) অধিকাংশ সময় চুপচাপ থাকতেন। দেখে মনে হতো তিনি গভীর এক ভাবনায় রয়েছেন। এটাই হলো সেই চিন্তা রাজ্যের ভাবনা। এই যোগ্যতা আমাদের সকলের ভিতর আনার জন্য চেষ্টা ও ফিকির দুটোই করা চাই।
☝আল্লাহ্ পাক আমাদের সকলকেই ভরপুর তাওফীক দান করেন। (আমীন..!)🔚
জান্নাতের বর্ণনা
0 Comments