*ইসলামে শিক্ষকের মর্যাদা ও গুরুত্ব*⬇️
❇শিক্ষাকে যাবতীয় উন্নয়নের চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হলে, শিক্ষকের ভূমিকার গুরুত্ব অপোরিসীম। বলতে গেলে এর বিকল্প নেই।
📗পবিত্র কোরআনে নাজিলকৃতো প্রথম আয়াতে জ্ঞানার্জন ও শিক্ষাসংক্রান্ত কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘পড়ো! তোমার প্রতিপালকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন একবিন্দু জমাট রক্ত থেকে। পড়ো! আর তোমার প্রতিপালক পরম সম্মানিতো।⏬
ইসলামে শিক্ষকের মর্যাদা ও গুরুত্ব
✒যিনি কলমের দ্বারা শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন, যা সে জানতো না। (সুরা আলাক, আয়াত: ১-৫) *প্রিয়নবী মুহাম্মদ (সাঃ) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা জ্ঞান অর্জন করো এবং জ্ঞান অর্জনের জন্য আদব-শিষ্টাচার শেখো। এবং যার কাছ থেকে তোমরা জ্ঞান অর্জন করো, তাকে সম্মান করো। ’ (আল-মুজামুল আওসাত, হাদিস নং: ৬১৮৪)⏬
🌎সমাজে শিক্ষকদের সম্মানের দৃষ্টিতে দেখার ঐতিহ্য ও রীতি বেশ প্রাচীন। শিক্ষা অনুযায়ী মানবচরিত্র ও কর্মের সমোন্বয় সাধনই হচ্ছে রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর তাগিদ। হাদিসে বর্ণিতো হয়েছে, ‘আল্লাহর পরে, রাসূলের পরে ওই ব্যক্তি সর্বাপেক্ষা মহানুভব যে জ্ঞানার্জন করে ও পরে তা প্রচার করে। (মিশকাত শরিফ)⏬
ইসলামে শিক্ষকের মর্যাদা ও গুরুত্ব
📚জায়েদ ইবনে সাবেত (রাঃ) একবার তার সওয়ারিতে (বাহন) ওঠার জন্য রেকাবে (সিঁড়িতে) পা রাখলেন। তখন ইবনে আব্বাস (রাঃ) রেকাবটি শক্ত করে ধরলেন। এ সময় জায়েদ ইবনে সাবেত (রাঃ) বললেন, হে রাসুল (সাঃ)-এর চাচাতো ভাই, আপনি হাত সরান। উত্তরে ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, না, আলেম ও বড়োদের সঙ্গে এমন সম্মানসূচক আচারণই করতে হয়। (আল ফকিহ ওয়াল-মুতাফাক্কিহ, ২/১৯৭)⏬
🔰খেলাফতের যুগেই ইসলাম প্রত্যেকের জন্য শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে। শিক্ষাকে সহজলভ্য করতে তখন শিক্ষকের জন্য সম্মানজনক পারিশ্রমিকও নির্ধারণ করা হয়েছিলো। যদিও দ্বীনি শিক্ষাঙ্গনের শিক্ষকরা কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জ্ঞান বিতোরণ করতেন।⏬
ইসলামে শিক্ষকের মর্যাদা ও গুরুত্ব
⭕আর তারা যেহেতু নিজেদের জীবিকার পেছোনে ব্যতিব্যস্ত সময় পার না করে, শান্ত-সৌম্য মস্তিষ্কে জ্ঞান বিতোরণের পবিত্র কাজে আত্মনিয়োগ করেছেন, তাই তৎকালীন খেলাফত ব্যাবস্থা বা সরকার তাদের সম্মানে অভিষিক্ত করেছিলেন। তাদের জ্ঞান বিতোরণের এ মহৎ কাজকে সম্মান জানিয়ে তাদের পরিবার-পরিজনের যাবোতীয় আর্থিক খরচ বহন করেছিলেন। যেনো জীবনের তাগিদে শিক্ষকদের ভিন্ন কোনো পথে পা বাড়াতে না হয়।⏬
📚উমর (রাঃ) ও উসমান (রাঃ) তাদের শাসনামলে শিক্ষা ব্যাবস্থাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তারা শিক্ষক ও ধর্মপ্রচারকদের জন্য বিশেষ ভাতার ব্যাবস্থা করেছিলেন। আবদুর রহমান ইবনুল জাওজি (রহঃ) তার বিখ্যাতো ‘সিরাতুল উমরাইন’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন, হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) হজরত ওসমান ইবনে আফ্ফান (রাঃ)-এর যুগে মুয়াজ্জিন, ইমাম ও শিক্ষকদের সরকারি ভাতা দেওয়া হতো। (কিতাবুল আমওয়াল, পৃষ্ঠা: ১৬৫)⏬
📘উমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহঃ)-ও তার যুগে ইয়াজিদ ইবনে আবি মালেক ও হারেস ইবনে ইউমজিদ আশারি (রহঃ)-কে ওই অঞ্চলে দ্বীন শেখানোর কাজে নিযুক্ত করেছিলেন। বিনিময়ে তাদের জন্য সম্মানজনক পারিশ্রমিকও নির্ধারণ করা হয়েছিলো। অবশ্য ইয়াজিদ (রহঃ) তা গ্রহণ করলেও হারেস (রহঃ) তা গ্রহণ করেননি। (কিতাবুল আমওয়াল, পৃষ্ঠা: ২৬২)⏬
📖বস্তুতো ইতিহাসে যুগ যুগ ধরে ইসলাম ও ইসলামের মনীষীরা শিক্ষক ও গুরুজনদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের শিক্ষা দিয়ে আসছেন। নিঃস্বার্থভাবে জ্ঞান বিতোরণের দীক্ষাও দিচ্ছেন নিরোন্তর ভাবে।🔚
ইসলামে শিক্ষকের মর্যাদা ও গুরুত্ব
0 Comments