অমুসলিমের তৈরি মাংস খাওয়া যাবে কী?

 অমুসলিমের তৈরি মাংস খাওয়া

অমুসলিমের তৈরি মাংস খাওয়া


👺অমুসলিমের হাতে জবেহ করা হালাল পশুর মাংস খাওয়া যাবে কী👺*👇


 🐓*হালাল পশু-পাখি* খাওয়া ‘হালাল’ হবার জন্য প্রধান শর্ত হলো, সেটিকে আল্লাহর নামেই জবাই করতে হবে। আল্লাহর নাম ছাড়া অন্য কারো নামে কিংবা কারো নামে নয় এমনিতেই জবাই করলে উক্ত প্রাণীর গোশতো ‘বিসমিল্লাহ’ বলে খেলেও বৈধ হবে না। প্রমাণ–⤵


 ✅*১.* *পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন–⤵


 *وَلَا تَأْكُلُوا مِمَّا لَمْ يُذْكَرِ اسْمُ اللَّهِ* *عَلَيْهِ وَإِنَّهُ لَفِسْقٌ* 


যেসব জন্তুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়নি, সেগুলো থেকে ভক্ষণ করো না; এ ভক্ষণ করা গোনাহ। (সুরা আনআম-১২১)


👪প্রিয় ভাই, লক্ষ্য করুন, উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা  প্রথমে নির্দেশ দিলেন لَا تَأْكُلُوا  এটি নিষেধসূচক ক্রিয়া। যার অর্থ হলো, ‘তোমরা খেয়ো না।’ এ ক্রিয়াটি বর্তমান ও ভবিষ্যতকালীন সময়ে উক্ত কাজটি করার প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে থাকে। তারপর বললেন, لَمْ يُذْكَرِ এটি অতীতকালীন নেতিবাচক অর্থবোধক ক্রিয়া। যার অর্থ হলো, ‘উল্লেখ করা হয়নি’, ‘নাম নেওয়া হয়নি’। সুতরাং আয়াতের অর্থ দাঁড়ালো- ‘যে প্রাণীর উপর বিসমিল্লাহ বলা হয়নি অতীতকালে, সে প্রাণী বর্তমানে ও ভবিষ্যতে খেয়ো না।’  অতএব বোঝা গেলো, খাওয়ার সময় বিসমিল্লাহ বললেই হালাল হয়ে যায় না, বরং প্রাণীটি অতীতকালে যখন জবাই করা হয়, তখন বিসমিল্লাহ বলতে হয়।⏬


 ✅*২. আল্লাহর নামে জবাই করা না হলে উক্ত প্রাণী খাওয়া যাবে না মর্মে একটি পরিস্কার হাদীস দেখুন–⤵


عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، ” أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَقِيَ زَيْدَ بْنَ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ بِأَسْفَلِ بَلْدَحٍ، قَبْلَ أَنْ يَنْزِلَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الوَحْيُ، فَقُدِّمَتْ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُفْرَةٌ، فَأَبَى أَنْ يَأْكُلَ مِنْهَا، ثُمَّ قَالَ زَيْدٌ: إِنِّي لَسْتُ آكُلُ مِمَّا تَذْبَحُونَ عَلَى أَنْصَابِكُمْ، وَلاَ آكُلُ إِلَّا مَا ذُكِرَ اسْمُ اللَّهِ عَلَيْهِ


📚আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ওহী নাজিল হবার আগে যায়েদ ইবনু নুফাইল এর সঙ্গে ‘আসফালি-বালদাহ’ নামক স্থানে সাক্ষাৎ হয়। তখন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে দস্তরখানা বিছানো হয়। (যেখানে কিছু পাকানো গোশতও রাখা হয়) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামে তা খেতে অস্বীকৃতি জানালেন। তারপর বলেন, আমি সে প্রাণী খাই না, যা তোমরা মুর্তির নামে জবাই করো। আমি শুধু ঐ প্রাণীই ভক্ষণ করি যার উপর আল্লাহর নাম নেওয়া হয়েছে।(সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৮২৬, ৩৬১৪)⏬

অমুসলিমের তৈরি মাংস খাওয়া

 ❇*প্রিয় ভাই,দেখুন, জবাইয়ের সময় আল্লাহর নাম না নিলেও যদি শুধু খাবার সময় বিসমিল্লাহ বললেই প্রাণীর গোস্ত হালাল হয়ে যেতো তাহলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেনো বিসমিল্লাহ বলে উক্ত গোশতো খেলেন না? কেনো তিনি জানালেন, জবাইয়ের সময় বিসমিল্লাহ না বললে উক্ত গোশতো খাওয়া যায় না? অতএব বোঝা গেলো, আল্লাহর নাম ছাড়া জবাই করলে প্রাণীর গোশতো ‘বিসমিল্লাহ’ বলে খেলেও হালাল হবে না।*⏬


 ⭕*প্রিয় ভাই কলেবর দীর্ঘ হয়ে যাওয়া আশঙ্কায় এখানে মাত্র একটি হাদীস উদাহরণস্বরূপ পেশ *করলাম। অন্যথায় এবিষয়ে আরো* *হাদীস আছে, যেগুলো দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়, জবাই করার সময় বিসমিল্লাহ না বললে উক্ত প্রাণী খাওয়া হালাল হয় না। এটাই ইসলামের বিধান। মনে রাখবেন, আরব-অনারব নয়; কুরআন-সুন্নাহই হলো শরিয়তের প্রাণ।*⏬


👪*পরিশেষে আপনাকে আরো বেশি আশ্বস্ত করার জন্য বর্তমান বিশ্বের অন্যতম আলেম শাইখুল ইসলাম মুফতী তাকী উসমানী দা.বা. এর তাহকীক পেশ করছি। তিনি এজাতীয় এক প্রশ্নের জবাবে বলেন*–⤵


📘*এব্যাপারে আমার রায়* *যাকে আমি بيني وبين الله সঠিক মনে করি। তাহলো* *শুধুমাত্র জবেহকারী আহলে* *কিতাব হলেই জবেহকৃত জন্তু হালাল হওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। বরং যে যাবত জবেহের সময়*বিসমিল্লাহ না পড়বে এবং শরয়ী নিয়মানুযায়ী রগসমূহ না কাটা হবে, সে যাবত তা হালাল হবে না। যেমনিভাবে জবেহকারী শুধু মুসলিম হলেই জবেহকৃত জন্তু*হালাল হয়ে যায় না, বরং জবেহের সমুদয় শর্ত পাওয়া যেতে হয়। ইসলাম আহলে-কিতাবের জবেহকৃত জন্তুকে হালাল সাব্যস্ত করেছে**আর অন্যান্য মুশরিকদের জবেহকৃত জন্তু হারাম সাব্যস্ত করেছে একারণেই যে, আহলে কিতাবগণ জবেহের সময় ইসলামের সমুদয় শর্তের প্রতি**লক্ষ্য রাখে। কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ ইয়াহূদী-নাসারা জবেহের শর্তসমূহের প্রতি কোনো খেয়ালই করে না, একারণে তাদের জবেহকৃত**জন্তুর গোশতো মুসলমানদের জন্য খাওয়া হালাল হবে না। (ফিক্বহী মাকালাত-৪/২৭৯-২৮১)* 

 *আল্লাহই সর্বাধিক জ্ঞাত।*🔚

অমুসলিমের তৈরি মাংস খাওয়া

Post a Comment

0 Comments