খারেজীদের ৩৫ টি বৈশিষ্ট্য ও আলামত।

    খারেজীদের বৈশিষ্ট্য 

খারেজীদের বৈশিষ্ট্য

 

 *চরমপন্থি খারেজীদের ৩৫ টি বৈশিষ্ট্য ও আলামত।*


১. তারা হবে নবীন, তরুণ ও নির্বোধ, অথচ নিজেদেরকে অনেক জ্ঞানী ভাববে। [বুখারী হা/৩৬১১, ৫০৫৭, ৬৯৩৪; মুসলিম হা/২৪৬২, ২৪৬৯] 


২. তারা সর্বোত্তম কথা বলবে, কিন্ত সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাজ করবে। [মুসলিম হা/২৪৬২; আবুদাঊদ হা/৪৭৬৭; আহমাদ হা/২০৪৪৬]


৩. বাহ্যিকভাবে সুন্দর কথা বলবে। [বুখারী হা/৫০৫৭


৪. মুখে ঈমানের কথা বললেও তাদের অন্তরে ঈমানের লেশমাত্র থাকবে না। [বুখারী হা/৩৪১৫]


✅৫. তাদের ঈমান ও সলাত তাদের গ্রীবাদেশ অতিক্রম করবে না। [মুসলিম হা/২৪৬২]


৬. পথভ্রষ্ট হওয়ার পর এরা আর ঈমানের দিকে ফিরে আসবে না। যেমন তীর আর ধনুকের সিলাতে ফিরে আসে না। [বুখারী হা/২৪৬২]


৭. তারা হবে ইবাদতে অন্যদের চেয়ে অগ্রগামী কিন্তু নিজেদের ইবাদতের জন্য হবে অহংকারী। লোকেরা তাদের ইবাদত দেখে অবাক হবে। [আহমাদ হা/১২৯৭২; ইবনু আবী আসিম, আস-সুন্নাহ হা/৯৪৫; আলবানী একে সহীহ বলেছেন, যিলালুল জান্নাহ হা/৯৪৫]


৮. তাদের নিদর্শন হলো, তাদের মাথা থাকবে ন্যাড়া। [বুখারী হা/৩৬১০; মুসলিম হা/২৪৫১; ইবনু মাজাহ হা/১৫৭]


৯. তারা মুসলমানদের হত্যা করবে আর কাফের, মুশরিক ও মূর্তিপূজারীদের ছেড়ে দিবে। [বুখারী হা/৩৬১০; মুসলিম হা/২৪৫১]


১০. তারা দ্বীনদারিতার ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করবে, এমনকি দ্বীন থেকে বেরিয়ে যাবে। [বুখারী হা/৩৬১০; মুসলিম হা/২৪৫১; আহমাদ হা/৭০৩৮; ইবনু আবী আসিম, আস-সুন্নাহ, হা/৯২৯-৯৩০]


✅১১. তারা মুসলিম শাসকদের নিন্দা করে, অপবাদ দেয় এবং তাদেরকে পথভ্রষ্ট ও কাফির বলে দাবী করে। যেমনটি খুওয়াইসারা রাসূল (সাঃ)-এর সাথে করেছিলো।


✅১২. তারা মানুষকে কিতাবুল্লাহর দিকে আহবান করবে। কিন্তু সে বিষয়ে তাদের কোনো জ্ঞানই থাকবে না। অর্থাৎ কিতাবুল্লাহ দিয়ে দলীল গ্রহণ করবে। কিন্তু না বুঝার কারণে দলীল গ্রহণের ক্ষেত্রে ভুল করবে। [আবুদাঊদ হা/৪৭৬৫; আহমাদ হা/১৩৩৩৮; মিশকাত হা/৩৫৪৩; আলবানী সহীহ বলেছেন, সহীহুল জামে‘ হা/৩৬৬৮]


✅১৩. তারা ইবাদতের ক্ষেত্রে কঠোরতা আরোপ করবে। [আহমাদ হা/১২৯৭২; বায়হাক্বী, মাজমা যাওয়ায়েদ ২২৯/৬; আলবানী সহীহ বলেছেন, যিলালুল জান্নাহ হা/৯৪৫]


✅১৪. তারা সর্বোত্তম দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবে। যেমন আলী ও মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর বিরুদ্ধে করেছিলো। [আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া ৭/৩০৫]


✅১৫. তারা তাদের নিহতোদেরকে জান্নাতী মনে করে। যেমন তারা নাহ্রাওয়ানের যুদ্ধের ময়দানে পরস্পরকে ‘জান্নাতমুখী’ ‘জান্নাতমুখী’ বলে ডাকছিলো’। [আল-বিদায়া ১০/৫৮৭]


✅১৬. ওরা এমন জাতি যাদের অন্তরে রয়েছে বক্রতা। [আলে-ইমরান ১০৬ নং আয়াতের তাফসীর, মুসনাদে আহমাদ হা/২২৩১৩]


✅১৭. মতোভেদ ও মতানৈক্যের সময় এদের আবির্ভাব হবে। [বুখারী হা/৬৯৩৩]


✅১৮. তাদের উৎপত্তি পূর্ব দিক (ইরাক ও তৎসংলগ্ন) থেকে হবে। [বুখারী হা/৭১২৩] 


✅১৯. যেসব আয়াত কাফেরের জন্য প্রযোজ্য তারা সেগুলিকে মুমিনদের উপর প্রয়োগ করবে। [বুখারী, হুজ্জাত কায়েম হওয়ার পর খাওয়ারেজ ও মুলহিদদের হত্যা করা অধ্যায়, ইবনু ওমর (রাঃ) হতে বর্ণিতো]


✅২০. তাদের আগমন ঘটবে শেষ যামানায়। [আবুদাঊদ হা/৪৭৬৯] 


✅২১. তারাও কুরআন ও সুন্নাহ দিয়েই কথা বলবে কিন্তু অপব্যাখ্যা করবে। [বুখারী হা/৩৪১৫] ফলে তারা আলেমদের সাথে সবচেয়ে বেশী শত্রুতা পোষণকারী হবে। প্রতিপক্ষের বিরোধিতা করতে গিয়ে জাল হাদীস পর্যন্ত রচনা করে। [আল-খাওয়ারিজ আক্বীদাতান ওয়া ফিকরান ৫৪-৬৮ পৃঃ] 


✅২২. সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধের নামে এ সম্পর্কিতো শরীআতের দলীলগুলিকে শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও যুদ্ধ করার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে থাকে। 


✅২৩. তারা কেবল ভীতি প্রদর্শন সংক্রান্ত আয়াতগুলি দিয়ে দলীল গ্রহণ করে। কিন্তু ভালো কাজের পুরস্কার বা উৎসাহমূলক আয়াতগুলিকে পরিত্যাগ করে। 


✅২৪. তারা আলেমগণকে মূল্যায়ন করবে না। নিজেদেরকেই বড়ো জ্ঞানী মনে করবে। যেমন খারেজীরা নিজেদেরকে আলী, ইবনু আববাস সহ সকল সাহাবী (রাঃ)-এর চেয়ে জ্ঞানী দাবী করেছিলো। 


✅২৫. ওরা হুকুম লাগানোর ক্ষেত্রে তড়িঘড়ি করে। [আল-খাওয়ারিজ আউয়ালুল ফিরাক্ব ফী তারীখিল ইসলাম পৃঃ ৩৭-৩৮ ও ১৪৬] 


✅২৬. তারাই সর্বপ্রথম মুসলিমদের জামা‘আত হতে বেরিয়ে গেছে এবং তাদেরকে পাপের কারণে কাফের সাব্যস্ত করেছে। [ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২৭৯/৩৪৯, ৭/৩]


✅২৭. তারা (ধারণা বা অনুমান) ভিত্তিক কাজে বেশী বিশ্বাসী। [আল-মিলাল ওয়ান-নিহাল ১১৬/১] 


✅২৮. তারা মনে করে যালেম শাসকের শাসন জায়েয নয়। [মাকালাতুল ইসলামমিয়্যন ২০৪/১] 


✅৩০. ওরা মুখে আহলে ইল্মদের কথার বকওয়ায করে কিন্তু তার মর্মাথ বুঝে না। [আশ-শারী‘আহ ২৮ পৃঃ


৩১. ওরা লোকদেরকে মুসলিম সমাজ হতে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আহবান জানায়। ফলে তারা নিজেরা মাদরাসা, শিক্ষা ইন্সটিটিউট, বিশববিদ্যালয়, সরকারী চাকুরী এবং মুসলমানদের সাথে বসবাস করা পরিহার করে। [দিরাসাতুন আনিল ফিরাক্ব ওয়া তারীখিল মুসলিমীন পৃঃ ১৩৪] 


৩২. তারা আত্মহত্যার মাধ্যমে এবং অন্যকে হত্যার মাধ্যমে সীমালংঘন করতোঃ রক্তপাত ঘটাবে। 


৩৩. যতোবারই তাদের আবির্ভাব হবে, ততোবারই তারা ধ্বংস হবে। এভাবে রাসূল (সাঃ) বিশ বার বলেন। [ইবনু মাজাহ হা/১৭৪; আলবানী হাসান বলেছেন, সহীহুল জামে‘ হা/৮১৭২; আরনাঊত্ব সহীহ বলেছেন, মুসনাদ ৩৯৮/৯] 


✅৩৪. ভূপৃষ্ঠে সর্বদাই খারেজী আক্বীদার লোক থাকবে এবং সর্বশেষ এদের মাঝেই দাজ্জালের আবির্ভাব হবে। [ইবনু মাজাহ হা/১৭৪; আলবানী একে হাসান বলেছেন, সহীহা হা/২৪৫৫] 


৩৫. তারা হবে সর্বনিকৃষ্ট সৃষ্টি। [মুসলিম হা/২৪৬৯, ২৪৫৭]🔚


Post a Comment

0 Comments