কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত
*কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত জাহেরী ও বাতেনী আদব সমূহ:*⬇
*📚কুরআন তিলাওয়াতের ফযিলত সমূহ:⬇⬇*
✅*১)* দিলের জং (গুনাহের কালিমা) মুছে যায়। *[শুআবুল ঈমান:৩ ,৩৯, হা:নং ১৮৫৯]*
✅*২)* আল্লাহ্ তা'আলার মহাব্বত বৃদ্ধি পায়। *[সূরা আনফাল, ২/শুআবুল ইমান ৩/ ৩৯৪, হা: নং ১৮৬৩]*
✅*৩)* প্রত্যেক হরফে কমপক্ষে ১০টি করে নেকী পাওয়া যায়, না বুঝে নড়লেও। *[তিরমিযী, হা:নং ৩১৩৫, মুস্তাদরাক, হা:নং ২০৪০]*
✅*৪)* কুরআন তেলাওয়াত কারীগন আল্লাহর ঘনিষ্ট লোক। *[মুসনাদে আহমদ হা:নং ১২২৯২]*
✅*৫)* কুরআন তেলাওয়াত কারীগণ দ্বারা ফেরেশ্তাদের শ্রেণীভূক্ত হওয়া যায়। *[সহীহ মুসলিম হা:নং ৭৯৮]*
✅*৬)* কষ্ট সাধ্যকরে কুরআন পাঠকারীর জন্য দু’টি পুরস্কারের প্রতিশ্র“তি রয়েছে। *[সহীহ মুসলিম হা: নং: ৭৯৮]*
✅*৭)* জান্নাতের উচ্চ স্তর পাওয়া যায়। *[মুসনাদে আহমদ হা: ৬৭৯৯]*
✅*৮)* জান্নাতে সম্মানের টুপি পারাবে। *[আল মুসতাদরাক লিল হাকাম:২০৮১]*
✅*৯)* তেলাওয়াত কারীর পিতা-মাতা নূরের টুপি লাভ করবে। *[সুনানে আবু দাউদ হা: ১৪৫৩]*
✅*১০)* কুরআন তেলাওয়াত কারীর আশপাশ বরকত ময় ও নূরময় হয়ে ওঠবে। *[সুনানে তিরমীযী হা: ৩০৯৭]*
✅*১১)* কুরআন জাতির মর্যাদাকে উন্নত করে।
*[সহীহ মুসলিম হা: ৮১৭]*
✅*১২)* কুরআন শিক্ষা গ্রহণকারী ও শিক্ষা প্রদানকারী সর্বোত্তম ব্যক্তি। *[সহীহ বুখারী হা: ৫০২৭]*
✅*১৩)* কুরআন নিয়ে মশগুল থাকার কারনে যিকির ও দোয়া করার জন্য অবসর না পাওয়া বক্তিকে দোয়া কারীদের থেকে ও বেশী দেওয়া হয়। *[সুনানে তিরমিযী হা: ৩১৫৩]*
✅*১৪)* কুরআন তেলাওয়াতের যোগ্যতা একটি ইর্ষানীয় বিষয়। *[সহীহ বুখারী হা: ৫০২৫]*
✅*১৫)* কুরআন শরীফকে কোনো চামড়ার ভিতর রাখিয়া আগুনে ফেলিয়া দেওয়া হয়, তাহলে তা পুড়িবেনা।
✅*১৬)* কোনো দল যদি কোনো ঘরে আল্লাহর পাকের কুরআন তেলাওয়াত করাতে থাকে। তাদের উপর প্রশান্তি বর্ষিত হয়। আল্লাহর রহমত তাদের ঢেকে নেয়। রহমতের ফেরেশ্তারা তাদেরকে বেষ্টন করে ফেলে আর আল্লাহ পাক ফেরেশ্তাদের মজলিসে তাদের নিয়ে আলোচনা করেন। *[সুনানে আবু দাউদ : ১৪৫৫]*⏬
*📚কুরআন তিলাওয়াতের জাহেরী আদব সমূহ:⬇⬇*
✅*১)* গভীর শ্রদ্ধা ও এহতেরামের সহিত ওযুসহ কেবলামুখী হইয়া বসিবে।
✅*২)* পড়ার সময় তাড়াতাড়ি না করিয়া তারতীল ও তাজবীদের সহিত পড়িবে।
✅*৩)* উপরে উল্লেখিত নিয়মে রহমত ও আজাবের আয়াতসমূহের হক আাদায় করিবে।
✅*৪)* ভান করিয়া হইলেও কান্নার চেষ্টা করিবে।
✅*৫)* রিয়া – লোক দেখানোর ভয় হইলে বা অন্য কোনো মুসলমানের কষ্ট বা অসুবিধা হওয়ার আশঙ্কা হইলে চুপেচুপে পড়িবে, নতুবা জোরে পড়িবে।
✅*৬)* মিষ্ট স্বরে পড়িবে। কেননা কালামেপাক মিষ্ট স্বরে পড়িবার জন্য বহু হাদীসে তাকীদ আসিয়াছে।
✅*৭)* কুরআন তেলাওয়াতের পূর্বে মিসওয়াক করে নেওয়া উত্তম।
✅*৮)* ভালো পোশাক পরিধানকরে খুশবু মেখে এবং পরিপাটি হয়ে তেলাওয়াতে বসা।
✅*৯)* তেলাওয়াতেরসময় টেক বা হেলান না দেওয়া।
✅*১০)* কুরআন তেলাওয়াতের স্থান পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন হওয়া উ্ত্তম।
✅*১১)* দরদ এবং ওয়াজদ (মহব্বত) এর স্বরে তেলাওয়াত করা উত্তম।
✅*১২)* কুরআন শরীফ রেহাল /বালিশ/ প্রভৃতি উচু কিছুর রেখে তেলাওয়াত করবে।⏬
*📚কুরআন তিলায়াতের বাতেনী আদব সমূহ:⬇⬇*
✅*১)* কালামে পাকের আজমত ও মর্যাদা অন্তরে রাখিবে যে, ইহা কতো উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন কালাম।
✅*২)* যে মহান আল্লাহ্ তা'আলার এই কালাম, তাহার উচ্চ শান , মহত্ত্ব ও বড়ত্ব অন্তরে রাখিবে।
✅*৩)* অন্তরকে ওয়াসওয়াসা ও বাজে খেয়াল হইতে পবিত্র রাখিবে।
✅*৪)* অর্থের প্রতি চিন্তা করিবে এবং স্বাদ লইয়া পড়িবে। রাসূলুল্লাহ্ *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* একবার সারারাত্র এই পড়িয়া কাটাইয়া দিয়েছেন--⤵
*إِنْ تُعَذِّبْهُمْ فَإِنَّهُمْ عِبَادُكَ وَإِنْ تَغْفِرْ لَهُمْ فَإِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيم*ُ
✴*অর্থ:-* হে আল্লাহ্! আপনি যদি তাহাদিগকে শাস্তি দেন তবে তাহার তো আপনারই বান্দা। আর যদি মাফ করিয়া দেন তবে আপনি পরাক্রমশালী ও হিকমতওয়ালা। *[সূরা: মায়েদাহ. ১১৮]*⏬
📚হযরত সাইদ ইবনে জুবায়ের (রাযি ) একরাত্রে এই আয়াত পড়িতে পড়িতে সকাল করিয়াছেন--⤵
*وَامْتَازُوا الْيَوْمَ أَيُّهَا الْمُجْرِمُون*
✴*অর্থ:-* হে অপরাধী দল আজ (কিয়ামতের দিন) তোমরা অনুগত বান্দাদের হইতে পৃথক হইয়া যাও। *[সূরা ইয়াসীন: ৫৯]*⏬
✅*৫)* যখন যে আয়াত তেলাওয়াত করিবে তখন অন্তরকে সেই আয়াতের অধীন ও অনুগত করিয়া লইবে। যেমন , রহমতের আয়াত তেলাওয়াত করিবার সময় অন্তর আনন্দে ভরিয়া উঠিবে আজাবের আয়াত তেলাওয়াত করিবার সময় অন্তর আনন্দে ভরিয়া উঠিবে আজাবের আয়াত তেলাওয়াত করিবার সময় অন্তর কাঁপিয়া উঠিবে।⏬
✅*৬)* উভয় কানকে এমন নিবিষ্ট করে রাখা যেনো আল্লাহ্ তা'আলা স্বয়ং কথা বলতেছেন আর তেলাওয়াত কারী নিজো কানে শুনিতেছেন। আল্লাহ্ তা'আলা দয়া করে আমাকে ও আপনাদেরকে এই আদব সমূহের প্রতি লক্ষ রেখে তেলাওয়াত করার তাওফীক দান করুন। আমীন..!⏬
✅*৭)* তিলাওয়াতকারী মনে মনে এই ধারণা করবে যে, মহান আল্লাহ্ তা'আলা হুকুম দিচ্ছেন পড়ো, দেখি আমার কালাম কতো সুন্দর করে পড়তে পার।⏬
✅*৮)* আর শ্রবণকারীরা অন্তরে এই ধারণা করবে যে, মহান আল্লাহ্ তা'আলার পবিত্র কালাম তিলাওয়াত করা হচ্ছে, সুতরাং অত্যন্ত ভক্তি, মহব্বত ও মনযোগসহ কুরআন শরীফ তিলাওয়াত শ্রবণ করা অপরিহার্য। *[সূরা: আ’রাফ :২০৪]*⏬
✅*৯)* খুশু -খুযু ও বিনয়ের সাথে তেলাওয়াত করা উত্তম।
✅*১০)* আমলের নিয়তে তেলাওয়াত করা।⏬
☝আল্লাহ আমাদের সকলকে সহীহ ভাবে কোরআন তেলাওয়াতের তাওফীক দান করুন।আমীন..!🔚
0 Comments