জিহাদ কি? জিহাদের কাদের জন্য ফরজ? Jihad and Islam

 


জিহাদ করার আগে ঈমান মজবুত করার প্রয়োজন আছে কি?❓👇🆗👇


✍️উত্তরঃ জিহাদ থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করার যতোগুলি অজুহাত আছে তার মধ্যে এটি হলো অন্যতমো। সশস্ত্র জিহাদ বা ক্বিতাল এমন একটি ফরজ যা আল্লাহ তা'আলা ফরজ করে দিলেও অনেকের তা ভালাে লাগবে না।


আল্লাহ তা'য়ালা বলেন--⤵


تب عليه القتال وهو لم


✳অর্থঃ তােমাদের জন্য ক্বিতাল ফরজ করে দেওয়া হলো কিন্তু তােমাদের কাছে তা অপছন্দনীয় হবে।

(সূরা বাকারাহ ২ঃ ২১৬)


🍀তাই আমরা দেখি মুসলিম দাবী করেও এক শ্রেণীর লােক ক্বিতালের কথা শুনে আঁতকে ওঠেন, বিরােধীতা করেন। কেউ কেউ হেকমতের কথা বলে ক্বিতালের বিকল্প পথ আবিষ্কার করে নেন। যে পথে জীবনের ঝুঁকি নেই, কষ্ট নেই, রক্ত ঝরাতে হয় না, ঘরবাড়ী, ব্যাবসা-বাণিজ্য, চাকুরীর কোনো ক্ষতি হয় না, যে পথে চললে মানুষ পাগল বলে না, সমাজে সুনাম প্রতিপত্তি অক্ষুন্ন থাকে, এসি রুমে বসে ইসলামী আন্দোলন করা যায়। আবার কেউ কেউ যাতে জিহাদের পথে না যাওয়া লাগে সে জন্য অনেক রকম বাহানা খুঁজে বেড়ায়। উল্লেখিতো বক্তব্য হলো জিহাদ থেকে বিরতো থাকারই একটি বাহানা।


⭕কেহ আবার ১৩ বছর শুধু ঈমানের মেহনতের কথা বলেন। জিহাদ করার আগে ১৩ বছর ঈমানের মেহনত করতে হবে এ নির্দেশ কুরআন-হাদীসে কোথায় আছে? কোনো সাহাবী কি জিহাদে অংশ নেওয়ার আগে কথিতো ১৩ বছর মেহনত করেছিলেন?


🌺মাক্কী জীবোনীর তুলনায় মাদানী জীবোনীতে অধিক সংখ্যক সাহাবী ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। তাঁরা কতো বছর ঈমানের মেহনত করেছিলেন? আল্লাহর রসূল (সাঃ) কি তাদের ১৩ বছর ঈমানের মেহনত করে পরে জিহাদ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন? মাদানী জীবোনীর সাহাবীদের ঈমান কি এতো দ্রুতো মজবুত হয়ে গিয়েছিলো, আর প্রথম সারির সাহাবী আবু বকর, উমর, ওসমান, আলী (রাঃ) দের মতো সাহাবীদের ঈমান মজবুত হতে সময় লাগলো কিনা ১৩ বছর!!!


☝আল্লাহর রসূল (সাঃ) এর সবচেয়ে কম সময়ের সাহাবী উসাইরিম (রাঃ) যিনি যুদ্ধ ক্ষেত্রে (ওহুদ যুদ্ধের সময়) ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। যিনি জীবনে এক ওয়াক্ত সলাত পড়ার সময় পাননি, একটি সাওম রাখার সুযােগ পাননি, সুযােগ পাননি হজ্জ করার, যাকাত দেওয়ার, কুরআন পড়ার সময় পাননি, ইসলামকে ভালোভাবেই বুঝেননি।


🍁ঈমান আনার পরই রসূল (সাঃ) এমন ব্যক্তিকেও জিহাদে পাঠিয়েছেন। তাকে তাে বলেননি যাও ১৩ বছর ঈমানের মেহনত করে নাও সলাত, সাওম, হজ্জ যাকাত শিখো, কুরআন পড়ো, আগে ইসলামকে বুঝে নাও এসবের আমল করো। ঈমান মজবুত হলেই কেবল জিহাদে অংশ নেবে।


🏩কেবল মসজিদে গিয়ে সলাত পড়লে, সাওম রাখলে, হজ্জে গেলেই ঈমান মজবুত হয় না, ঈমান মজবুত হয় ইসলামের জন্য, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য, জান মালের যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকা, যে কোনো বিপদ-আপদ হাসিমুখে বরণ করে নেওয়ার মানসিকতার মাধ্যমে।


✊জিহাদের ময়দানে যে কঠিন কষ্ট হয়, যেসব পরীক্ষা দিতে হয় তার সিকি ভাগের কষ্টের পরীক্ষা সলাত, সাওম, হজ্জ, যাকাতে হয় না। ক্ষুধা, কষ্ট, শারিরীক কষ্ট, মানসিক টেনশন তাে আছেই, প্রতি পদে পদে রয়েছে জীবনের ঝুঁকি। যে কোনো সময় একটি বুলেট কেড়ে নিতে পারে প্রাণ, কিংবা শত্রুর হাতে বন্দী হয়ে অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হওয়ার আশংকা আছে। সামনে শত্ৰু, মাথার ওপর বিমান চক্কর দিচ্ছে। প্রচন্ড গােলা বর্ষণ করে যাচ্ছে শত্রু বাহিনী, যে কোনো সময় প্রাণ চলে যেতে পারে তবুও পিছপা হওয়ার কোনো উপায় নেই। এমন চরম বিপদ, তারপরও পিছু হটা যাবে না। পিছু হটলে চিরস্থায়ী জাহান্নামীর খাতায় নাম লেখা হয়ে যাবে।


❇অতএব, ধৈর্য্যের সাথে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। এতে হয় মৃত্যু ঘটবে অথবা বিজয়ী হবে। মৃত্যু হলে সেটা হবে শহীদি মৃত্যু আর বিজয়ী হলেও সে হবে গাজী। এ উভয় ব্যক্তিই মহা-পুরস্কারে ভূষিতো হবে বলে আল্লাহ তা'আলা ঘােষণা করেছেন। এর নামই ঈমানের পরীক্ষা। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জীবনের পরােয়া না করে আল্লাহর শত্রুদের মােকাবেলায় নামার মাধ্যমেই ঈমানদার-মুনাফিকের ফয়সালা হয়ে যায়।

আল্লাহর নির্দেশ পালনে যে মৃত্যুকে হাসিমুখে বরণ করে নিতে পারে, যে কোনো কষ্ট বিপদকে তুচ্ছ জ্ঞান করতে পারে তার মতো মজবুত ঈমানদার আর কে আছে? তার ঈমান মজবুত বলেইতাে নিহতো হােক আর জীবিতো থাক উভয় অবস্থায় আল্লাহ তা'আলা তাকে মহা পুরস্কার দেওয়ার ঘােষণা করেছেন


🌹কোনো ব্যক্তি যদি কথিতো ১৩ বছর ঈমানের মেহনত করে ঈমানকে পাকাপােক্ত করে জিহাদ করতে আসে ও পরে মৃত্যুর ভয়ে ময়দান ত্যাগ করে তবে কি মূল্য আছে ১৩ বছর মেহনতের? তার ১৩ বছরের সলাত, সাওম সহ যাবতীয় আমল কি তাকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাতে পারবে? জিহাদে না গিয়ে এভাবে ১৩ বছর কেনো সারা জীবন মেহনত করলেও ঈমানের কোনো পরীক্ষা হবে না, বুঝা যাবে না ঈমান মজবুত হলাে কি হলাে না।


🌻ঈমানের পরীক্ষা করতে হলে, ঈমান মজবুত করতে হলে জিহাদের ময়দানেই যেতে হবে। মৃত্যুর মুখােমুখি দাড়িয়েও যদি অটল অবিচল থাকা যায় তবেই বুঝা যাবে ঈমান


✅মজবুত হয়েছে। আর মন যদি প্রাণের ভয়ে জিহাদের ময়দান ছেড়ে পালাতে চায়, তাহলে বুঝা যাবে এতো বছরের সলাত, সাওমেও ঈমানদার হওয়া যায়নি, ঈমান মজবুত হয়নি, তবে তাকে মজবুত করার জন্য এ ময়দানই আঁকড়ে ধরে থাকতে হবে। এভাবেই জিহাদের মাধ্যমেই কেবল ঈমান মজবুত হতে পারে জিহাদ থেকে পালিয়ে বেড়িয়ে বাহানা তালাশ করে শুধু নিজেকে প্রবঞ্চনা করা যেতে পারে, ঈমান মজবুত করা যায় না।🔚

Post a Comment

0 Comments