জান্নাতি নারীদের ২০টি গুণাবলী।নারীদের জান্নাত যাওয়ার সহজ উপায়।

 

👭*বেহেশতী নারীর গুনাবলী সম্পর্কিতো ২০টি হাদীস:👭*👇⬇👇 🌹🆗🌹


📚বিভিন্ন হাদীসে জান্নাতী বা বেহেশতী নারীর বিভিন্ন গুনাগুন সম্পর্কে বর্ণিতো আছে। তন্মধ্যে ২০টি হাদীস নিম্নে বর্ণনা করা হলো:-⤵


✅*১)* হযরত আনাস (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) হতে বর্ণিতো, নবী কারীম *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* ইরশাদ করেছেন-- যে মহিলা ,

✴*১)* পাচঁ ওয়াক্ত নামায (নিয়মমতো) আদায় করবে।

 ✳*২)* রমযানের রোযা (ঠিকমতো) রাখবে। ✴*৩)* লজ্জাস্থান হেফাযত করবে এবং ✳*৪)* স্বামীকে মান্য করবে, তাকে (কিয়ামতের দিন) বলা হবে, যে দরজা দিয়ে মন চায় সে দরজা দিয়ে তুমি বেহেশতে প্রবেশ করো। *(মিশকাত)*


✅*২)* হযরত উম্মে সালমা (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহা) হতে বর্ণিতো, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ্ *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* ইরশাদ করেছেন-- যে নারী তাঁর স্বামীকে সন্তুষ্ট রেখে মৃত্যুবরণ করবে সে বেহেশতী হবে (অবশ্য স্বামীর শরীয়ত বিরোধী কাজে নয়)। *(তিরমিযী)*⏬


✅*৩)* হযরত আনাস (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) বর্ণনা করেন যে, একবার কয়েকজন মহিলা মহানবী *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* এর দরবারে উপস্থিত হয়ে আরজ করলো, হে আল্লাহর রাসূল! জিহাদের মাধ্যমে পুরুষরা মহিলাদের চেয়ে সওয়াবের দিক দিয়ে অনেক অগ্রসর হয়ে গেছে। সুতরাং আমাদের জন্য এমন কোনো আমল আছে কি? যা আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদদের আমলের বরাবর হতে পারে? তখন রাসূলুল্লাহ্ *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* বললেন, মহিলারা নিজের ঘরে দৈনন্দিন কাজকর্ম করলে তা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের সমান সওয়াব হবে। *(দুররে মনসূর)*⏬


✅*৪)* হযরত হাব্বান বিন হাবলা (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) থেকে রাসূল *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* এর হাদীস বর্ণিতো আছে যে, দুনিয়ার নেককার মহিলারা যখন বেহেশতে প্রবেশ করবে, তখন দুনিয়ার নেক আমলের বিনিময়ে তাঁরা বেহেশতী হূরদের চেয়ে অধিক মর্যাদাশীল হবে। *(তাযকেরা)*


✅*৫)* হযরত উবাদাহ বিন সামিত (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) থেকে বর্ণিতো, রাসূল *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* ইরশাদ করেছেন-- যে মহিলা গর্ভাবস্থায় বা বাচ্চা প্রসবকালে মারা যায়, সে শহীদের মর্যাদা পাবে। *(কানযুল উম্মাল)*⏬


✅*৬)* হযরত আনাস (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) থেকে বর্ণিতো, রাসূলুল্লাহ্ *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* ইরশাদ করেন-- ঐ মহিলা সর্বশ্রেষ্ঠ যে পুতঃপবিত্র থাকে এবং মহব্বত রাখে অর্থাৎ সতীত্ব বজায় রাখে এবং স্বামীর প্রতি সর্বাধিক ভালবাসা রাখে। *(কানযুল উম্মাল)*⏬


✅*৭)* হযরত আবু হুরায়রা (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) বলেন যে, (একবার) নবী কারীম *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো, মহিলাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ কে? প্রতি উত্তরে নবীজী *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* ইরশাদ করেন-- ঐ মহিলা, যার দিকে তাকালে স্বামীকে সন্তুষ্ট করে দেয় আর কোনো কাজ করতে বললে (তাকে) মান্য করে। স্বামীর অপছন্দনীয় কাজে নিজেকে ব্যবহার করে না এবং তার অর্থ-সম্পদ অপচয় বা অপব্যবহার করে না। *(মিশকাত)*⏬


✅*৮)* হযরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) রাসূলুল্লাহ্ *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* এর হাদীস বর্ণনা করেন যে, নবী করীম *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* ইরশাদ করেছেন-- আমার উম্মতের মধ্যে সর্বপ্রথম বেহেশতে গমনকারী ঐ সমস্ত মহিলারা হবে যারা দ্বীনের ব্যাপারে, ধর্মের ব্যাপারে সাহসী অগ্রণী। *(মুসনাদে আহমদ)*⏬


✅*৯)* হযরত আনাস (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) রাসূলে আকরাম *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* থেকে বর্ণনা করেছেন-- যে মহিলা বিধবা অবস্থায় বাচ্চা প্রতিপালনের জন্য ঘরে আবদ্ধ থাকবে, সে বেহেশতে আমার সাথে থাকবে। *(কানযুল উম্মাল)*


✅*১০)* হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) নবী কারীম *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* থেকে বর্ণনা করেন যে-যে মহিলাকে তার স্বামী দুঃখ-কষ্ট দেয় আর সে বিরক্ত বা অসহ্যবোধ না করে স্বামীকে সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করে, তা হলে আল্লাহ্‌ তা'আলা একজন ফেরেশতা নিযুক্ত করেন যে আল্লাহর প্রশংসা ও পবিত্রতা বর্ণনা করবে এবং এর সমস্ত সওয়াব ঐ মহিলার আমলনামায় লিখে দেওয়া হবে। *(ফিরদাউস)*⏬


✅*১১)* হযরত সাওবান (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ্ *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* ইরশাদ করেছেন, সর্বোৎকৃষ্ট উপকারী বস্তু হলো ✳*১.* যিকিরকারী জিহবা, ✴*২.* কৃতজ্ঞতা পরায়ণ অন্তর, এবং ✳*৩.* এমন ঈমানদার স্ত্রী যে তাঁর দ্বীনের ব্যাপারে (স্বামীকে) সাহায্যকারিনী। *[তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ]*⏬


✅*১২)* হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহা) বর্ণনা করেন যে, একবার এক গ্রাম্য মহিলা আমার কাছে এসেছিলো। তাঁর সাথে দুটি কন্যা সন্তান ছিলো। আমি খাওয়ার জন্য তাকে তিনটি খেজুর দিই। সে দুই মেয়েকে দুটি দেয় এবং নিজে একটি নেয়। তাঁর খেজুরটি যখন সে খাওয়ার জন্য মুখের কাছে নেয়, তখন মেয়ে দুটি ঐ খেজুরটিও চায়। ফলে সে তাঁর খেজুরটি দু’ভাগ করে দুই মেয়েকে দিয়ে দেয়।আম্মাজান হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহা) বলেন যে, পরে যখন এই ঘটনা আমি নবীজী *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* কে শোনালাম। তখন তিনি ইরশাদ করেন-- নিঃসন্দেহে আল্লাহ্‌ পাক তাঁর উপর বেহেশত ওয়াজিব করেছেন এবং দোযখ থেকে মুক্তি দিয়েছেন। *(কানযুল উম্মাল)*⏬


✅*১৩)* হযরত আবু উমামা (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) হতে বর্ণিতো যে, নবী কারীম *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* ইরশাদ করেছেন-- মহিলারা মনে রেখো, তোমাদের মধ্যে যে নেককার হবে, সে নেককার পুরুষদের (স্বামীর) পূর্বে বেহেশতে প্রবেশ করবে। পরে তাদেরকে গোসল দিয়ে খুশবু লাগিয়ে নিজো নিজো স্বামীদের নিকট হস্তান্তর করা হবে। তখন তাঁরা লাল ও হলুদ রঙের বাহনের উপর উপবিষ্ট থাকবে। সেখানে স্বামীর সাথে বিক্ষিপ্ত মোতির মতো বেঁচে থাকবে। *(কানযুল উম্মাল)*⏬


✅*১৪)* হযরত আবদুল্লাহ বিন উমর (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) কর্তৃক বর্ণিতো আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* ইরশাদ করেছেন, মহিলাদের সৌভাগ্যের দলীল হলো, তাঁর প্রথম সন্তান কন্যা হওয়া। নবীজী *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* বলেন, ঐ মহিলা স্বামীর জন্য বেশী বরকতপূর্ণ যার (বিবাহের) মোহর অতি কম এবং প্রথম সন্তান কন্যা। *[দুররে মনসূর]*⏬


✅*১৫)* হযরত আনাস (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) থেকে বর্ণিতো, নবী কারীম *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* ইরশাদ করেন- যে মহিলা স্বামীর অনুমতি ব্যতীতো ঘর থেকে বের হয়, সে আল্লাহর রোষানলে নিপতিত থাকে। যে পর্যন্ত না সে ঘরে ফিরে আসে কিংবা স্বামী তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়। *(কানযুল উম্মাল)*⏬


✅*১৬)* হযরত আবু হুরায়রা (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) থেকে বর্ণিতো, রাসূলুল্লাহ্ *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* ইরশাদ করেন-- যে মহিলা রাতে জাগ্রতো হয়ে নামায আদায় করে এবং স্বীয় স্বামীকে জাগিয়ে দেয়, যাতে সেও নামায আদায় করতে পারে, সে যদি না জাগে তাহলে জাগানোর জন্য মুখের উপর পানির ছিটা মারে। এ ধরনের মহিলার উপর আল্লাহর রহমত। *(আবুদাউদ)*⏬


✅*১৭)* হযরত হুসাইন ইবনে মিহসান (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) বর্ণনা করেন যে, একবার তাঁর ফুফু নবী কারীম *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* এর খেদমতে হাজির হলে নবীজী তাকে জিজ্ঞাসা করেন, তোমার কি স্বামী আছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ আছে। তখন নবীজী জানতে চাইলেন, তুমি তাঁর সাথে কিরূপ আচার ব্যবহার করো? তিনি বললেন, সাধ্যমতো সকল পন্থায় তাঁর সেবা করি এবং আমার সাধ্যমতো তার সাথে ভালো আচরণ করি। এবার রাসূলুল্লাহ্ *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* বললেন-- মনে রেখো, সেই তোমার বেহেশত ও দোযখ। *(তারগীব)*⏬


✅*১৮)* হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহা) বলেন, নবী কারীম *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* ইরশাদ করেন-- কোনো নারী অপব্যয় না করে স্বীয় স্বামীর ঘর থেকে কোনো পানাহারের বস্তু (দান) খরচ করলো, এতে স্বামীরও সওয়াব হবে। উভয়ের সওয়াবে কোনো কমতি হবেনা। *(বুখারী)*


✅*১৯)* হযরত আবু উমামা (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) বর্ণনা করেন যে, একবার রাসূলুল্লাহ্ *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* এর দরবারে একটি শিশু সন্তান কোলে নিয়ে জনৈক মহিলা উপস্থিত হলো। তখন নবী কারীম *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* ইরশাদ করেন-- মহিলারা প্রথমে পেটে বাচ্চা ধারন করে পরে সন্তান প্রসব করে অতপর তাঁর (নবজাতকের) সাথে কতোই না উত্তম আচরন করে এবং মায়া-মহব্বত, আদর-সোহাগ করে থাকে। সুতরাং স্বামীর সাথে তাঁর আচরন যদি খারাপ না হয়, আর নামায রীতিমতো আদায় করে, তাহলে সে বেহেশতে যাবে। *[দুররে মনসূর]*⏬


✅*২০)* হযরত আবদুর রহমান বিন আউফ (রাযিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* ইরশাদ করেছেন, গর্ভকালে মহিলারা এমন উত্তম বিনিময় পায়, যেমন পায় দিনভর রোযাদার ব্যক্তি, তাহাজ্জুদ আদায়কারী ব্যক্তি, অনুনয়-বিনয়কারী ব্যক্তি এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী ব্যক্তি। প্রসব বেদনার বিনিময় সমস্ত সৃষ্টিজগৎ থেকে গোপন রাখা হয়েছে। সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর বাচ্চাকে দুধ পান করানোর সময় প্রতি চুমুকের বিনিময়ে প্রানীকে জীবন দান করার পরিমাণ সওয়াব পাবে। দুধ ছাড়াবার সময় একজন ফেরেশতা এসে মুবারকবাদ জানায় এবং বলে এসব কষ্টের বিনিময়ে তোমার অতীতের গুনাহ মাফ হয়ে গিয়েছে। আজ থেকে নতুনভাবে আমল করো। *(কানযুল উম্মাল)*


☝আল্লাহ্ তা'আলা আমাদের মা-বোনদেরকে এসব গুণে গুনাণ্বীত হয়ে আমল করার তাওফীক দান করেন। 👪আমীন..!🔚

Post a Comment

0 Comments