এক জান্নাতী সাহাবীর আমল।The period of a Jannati Sahabi?



 💐*এক জান্নাতী সাহাবীর আমল:💐👇⬇👇 🌹🆗🌹


📚হযরত আনাস ইবনে মালেক (রাদিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ্ *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দরবারে (মসজিদে নববীতে) উপবিষ্ট ছিলাম। তখন তিনি বললেন, তোমাদের নিকট এখন একজন জান্নাতী মানুষ আগমন করবে। (বর্ণনা কারী বলেন) অতঃপর একজন সাহাবী আগমন করলেন। তাঁর দাড়ি থেকে সদ্যকৃতো অযুর পানির ফোটা ঝরে পড়ছিলো। তিনি তার বাম হাতে জুতা নিয়ে মসজিদে প্রবেশ করলেন।


📘তাঁর পরেরদিনও নবী করীম *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে অনুরূপ কথা বললেন এবং প্রথম দিনের মতো সেই সাহাবী আগমন করলেন।


❇যখন তৃতীয় দিন হলো, নবী করীম *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) সেই কথা আবার বললেন এবং যথারীতি সেই সাহাবী পূর্বের অবস্থায় আগমন করলেন। নবী করীম *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন আলোচনা শেষ করে উঠে দাঁড়ালেন তখন হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রাদিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) সেই সাহাবীর অনুগামী হলেন। তিনি তাকে বললেন, আমি আমার পিতার সাথে ঝগড়া করে শপথ করেছি, তিনদিন পর্যন্ত তার ঘরে যাবো না। এই তিনদিন আমাকে যদি আপনার ঘরে থাকার সুযোগ করে দিতেন, তবে আমি সেখানে থাকতাম। তিনি বললেন, হ্যাঁ,থাকতে পারো।


📙বর্ণনাকারী হযরত আনাস (রাদিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু)  বলেন, হযরত আবদুল্লাহ (রাদিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) বলতেন, তিনি তাঁর সাথে সেখানে সেই তিন রাত অতিবাহিতো করলেন। তিনি তাঁকে রাতে উঠে তাহাজ্জুদ নামায পড়তেও দেখলেন না। তবে তিনি যখন ঘুমাতেন, বিছানায় পার্শ্ব পরিবর্তন করতেন তখন আল্লাহর যিকির করতেন। হযরত আবদুল্লাহ (রাদিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) বলেন, তাঁর মুখ থেকে কিন্তু ভালো কথা ছাড়া কোনো মন্দ কথা শুনিনি। যখন তিনদিন অতিবাহিতো হয়ে গেলো এবং তাঁর আমলকে সাধারণ ও মামুলি মনে করতে লাগলাম, তখন তাকে বললাম, হে আল্লাহর বান্দা! আমি রাসূলুল্লাহ্ *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) কে আপনার সম্পর্কে তিনবার একথা বলতে শুনেছি যে, এখনই তোমাদের নিকট একজন জান্নাতী মানুষ আগমন করবে। উক্ত তিনবারই আপনি আগমন করেছেন। তাই আমি ইচ্ছা করেছিলাম আপনি কী আমল করেন তা দেখতে আপনার নিকট থাকবো। যাতে আমিও তা করতে পারি। আপনাকে তো বেশি আমল করতে দেখিনি। তাহলে কোন গুণ আপনাকে এই মহান মর্যাদায় উপনীতো করেছে, যা রাসূলুল্লাহ্ *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন?


🍁তিনি বললেন, তুমি যা দেখেছো, ঐ অতোটুকুই। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাদিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) বলেন, যখন আমি ফিরে আসছিলাম তখন তিনি আমাকে ডাকলেন। তারপর বললেন, আমার আমল বলতে ঐ অতোটুকুই, যা তুমি দেখেছো। তবে আমি আমার অন্তরে কোনো মুসলমানের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করি না এবং আল্লাহ্ তা'আলা কাউকে কোনো নিয়ামত দান করলে সেজন্য তাঁর প্রতি হিংসা রাখি না।


📔হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাদিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) বলেন, এ গুণই আপনাকে এতো বড়ো মর্যাদায় উপনীতো করেছে। আর সেটাই আমরা করতে পারি না। *[মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ১৯১৮; আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া ৮/৭৪; আততারগীব ওয়াত তারহীব ৫/১৭৮]


*📚হাদীসের কিছু ফাওয়ায়েদ:📚


📒উক্ত হাদীসে আগন্তুক জান্নাতী সাহাবীর নাম অনুচ্চারিতো হলেও তিনি হলেন বিখ্যাতো সাহাবী হযরত সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রাদিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) যিনি জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত দশ সাহাবীর একজন। এখানে তাঁর ফযীলত ও অনন্য মর্যাদার পাশাপাশি তাঁর বিশেষ একটি গুণ ও অনুপম স্বতন্ত্র বৈশিষ্টের কথা আলোচনা করা হয়েছে।


📓উক্ত হাদীসটিতে মুসনাদে আহমদের বর্ণনায় আগন্তুক সাহাবীকে ‘একজন আনসারী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। নিঃসন্দেহে তা পরবর্তী কোনো বর্ণনাকারীর ভুল। কারণ অন্যান্য বর্ণনা সূত্রে স্পষ্টভাবেই হযরত সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রাদিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) এর নাম উল্লেখ রয়েছে।


📚রাসূলে কারীম *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবায়ে কেরামের সম্মুখে এক জান্নাতী সাহাবীর কথা বলে নেক্কার মানুষের প্রশংসার মাধ্যমে সৎকর্ম ও উত্তম আচরণের প্রতি জোর তাকীদ দিয়েছেন এবং তাদেরকে সেই মহৎ স্বভাব ও বিশেষ গুণ অর্জন করার প্রতি উৎসাহিতো করেছেন।


🌷মুমিনদের করণীয় হলো : মুত্তাকী ও নেক্কার লোকদের আমল আগ্রহ ও মনোযোগের সাথে পর্যবেক্ষণ করা এবং অনুসরণ-অনুকরণের নিমিত্তে সেই গুণ অর্জন করার যথাসাধ্য চেষ্টা করা। প্রয়োজনে তাদের নিকট অবস্থান করে তাদের সান্নিধ্য গ্রহণ করা। যেমন:--⤵


আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেছেন--⤵


✳*(তরজমা)* তাঁরা ছিলেন এমন লোক যাদেরকে আল্লাহ্ হেদায়াত দান করেছেন। সুতরাং তুমিও তাদের পথের অনুসরণ করো। *[সূরা আনআম : ৯০]


📚হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাদিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) এই প্রেরণা থেকেই ঐ সাহাবীর নিকট অবস্থান করেছেন।


📕আর হাদীসের সেই সুস্পষ্ট বক্তব্য, যা সহজেই বোধগম্য, জান্নাত লাভের অধিকারী নিষ্কলুষ আত্মার ফযীলত।  আত্মশুদ্ধি করা, অন্তরকে পাক-পবিত্র রাখা এবং হিংসা-বিদ্বেষ ও অন্যান্য আত্মার ব্যাধি থেকে মুক্ত রাখা হচ্ছে এমন একটি গুণ, যা মানুষকে দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতার শীর্ষ চূড়ায় নিয়ে যায়, তথা জান্নাত লাভের উপযোগী বানায়। কারণ, মানুষের অন্তর হলো ঈমান-ইখলাস ও তাক্বওয়ার স্থান। সুতরাং কোনো খাঁটি মুমিনের অন্তরে ঈমান-তাক্বওয়া ও হিংসা-বিদ্বেষ কখনো একত্র হতে পারে না। এ জন্যই রাসূলে কারীম *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) হযরত আনাস (রাদিআল্লাহু তা'আলা আ'নহু) কে বলেছেন, হে বৎস! কারো প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা ব্যতীতো তুমি যদি সকাল-সন্ধ্যা অতিবাহিতো করতে (জীবন কাটাতে) সক্ষম হও, তাহলে তাই করো।


⭕হিংসা-বিদ্বেষ হলো ঈমান-ইসলামের পরিপন্থী এমন অসৎ প্রবোণতা, যা মানুষের নেকীকে ধ্বংস করে এবং জান্নাতের পথ হতে দূরে সরিয়ে দেয়। তাছাড়া হাদীস শরীফে বর্ণিতো হয়েছে, মানুষ যতোক্ষণ হিংসা-বিদ্বেষ থেকে মুক্ত থাকবে ততোক্ষণ তারা কল্যাণের উপর অবিচল থাকবে।


☝আল্লাহ্ তা'আলা আমাদেরকে পবিত্র হৃদয় দান করুন। (আমীন..!)🔚

Post a Comment

0 Comments