শরীয়তের বিধি বিধান কতো প্রকার ও কি কি? How many types of provisions of the law?



*জিজ্ঞাসা:* শরীয়তের বিধি বিধান কতো প্রকার ও কি কি? সংজ্ঞা ও বিধানসহ জানালে উপকৃতো হতাম।❓👇🆗👇


✍️*জবাব: *শরীয়তের বিধানসমূহ মোট আট শ্রেণীতে বিভক্ত যথা:--⤵


✳*০১)* ফরয।

✴*০২)* ওয়াজিব। 

✳*০৩)* সুন্নত।

✴*০৪)* মুস্তাহাব।

✳*০৫)* হারাম।

✴*০৬)* মকরুহে তাহরিমী।

✳*০৭)* মকরুহে তানযিহী।

✴*০৮)* মুবাহ বা জায়েয।


*📚০১) ফরযের সংজ্ঞা ও বিধান:📚


✅ফরয আল্লাহ্ প্রদত্ত এমন বিধান যা সুনিশ্চিতরূপে অকাট্ট দলীলের আলোকে প্রমাণিতো, যাতে বিন্দুমাত্র সংশয়ের অবোকাশ নেই। ফরয দুই প্রকার। যথা:--⤵


✴*ক)* ফরযে আইন। 


✳*খ)* ফরযে কিফায়া।


✴*ক) ফরযে আইন:-* যে বিধান পালন করা প্রতিটি সাবালক নরো নারীর উপর সমোভাবে অত্যাবশ্যক।


✳*খ) ফরযে কিফায়া:-* যে বিধান কতক লোক মিলে পালন করলে তার দায় থেকে সকলেই মুক্তি লাভ করে। পক্ষান্তরে কেউ না পালন করলে সকলেই ফরয পরিত্যাগ করার দোষে দোষী সাব্যস্ত হয়। কেউ ফরয বিধান পালন না করলে সে ফাসেক বলে বিবেচিতো হবে এবং পরকালে কঠিন শাস্তির উপযুক্ত হবে। আর ফরয অস্বীকার করলে কাফের হয়ে যায়।


*📚০২) ওয়াজিবের সংজ্ঞা ও বিধান:📚


✅যে বিধান সুনিশ্চিত দলীলের আলোকে প্রমাণিতো নয়; বরং প্রবল ধারণা প্রসূতো দলীলের ভিত্তিতে প্রমাণিতো তাকে ওয়াজিব বলা হয়। কার্যতো ওয়াজিব ফরয বিধানের মতোই অবশ্য কর্তব্য। তবে এর অস্বীকার কারী কাফের সাব্যস্ত হবে না।


*📚০৩) সুন্নতের সংজ্ঞা ও বিধান:📚


✅যে কাজ রাসূল *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* অথবা সাহাবায়ে কেরাম করেছেন, করতে বলেছেন কিংবা সমর্থন করেছেন তাকে সুন্নত বলা হয়। সুন্নত দুই প্রকার। যথা:--⤵


✳*ক)* সুন্নতে মুয়াক্কাদা বা সুন্নতে হুদা (অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত)


✴*খ)* সুন্নতে গয়রে মুয়াক্কাদ বা সুন্নতে যায়েদা (সম্পূরক সুন্নত)


*📚ক) সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ এর সংজ্ঞা ও বিধান:📚


✅যে কাজ রাসূল *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) অথবা সাহাবায়ে কেরাম নিয়োমিতো করেছেন এবং বিনা কারণে পরিত্যাগ করেননি তাকে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ বলা হয়। সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ আমলগতো দিক থেকে ওয়াজিবের মতো। তবে ওয়াজিবের তুলনায় সুন্নতে মুয়াক্কাদা পরিত্যাগের ক্ষেত্রে গুনাহের পরিমাণটা কম হবে। এবং কোনো কারণে সুন্নতে মুয়াক্কাদা ছুটে গেলে তা পরবর্তীতে কাযা করতে হয় না।


*📚খ) সুন্নতে গাইরে মুয়াক্কাদাহ এর সংজ্ঞা ও বিধান:📚


✅যে কাজ রাসূল *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম)* অথবা সাহাবায়ে কেরাম নিয়ো়মিতো করেননি; বিনা কারণে কখনো কখনো পরিত্যাগও করেছেন তাকে সুন্নতে গাইরে মুয়াক্কাদাহ বলা হয়। সুন্নতে গাইরে মুয়াক্কাদা পালন করলে পূণ্য হবে। তবে পরিত্যাগ করলে কোনো গুনাহ নেই।


*📚০৪) মুস্তাহাবের সংজ্ঞা ও বিধান:📚


✅যে কাজ রাসূল *(সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং সাহাবায়ে কেরাম কালেভদ্রে কখনো করেছেন তাকে মুস্তাহাব বলা হয়। এটা আদায় করলে সওয়াব লাভ হবে। না করলে কোনো অসুবিধা নেই। মুস্তাহাবকে মান্দুবও বলা হয়


*📚০৫) হারামের সংজ্ঞা ও বিধান:📚


✅আল্লাহ্ প্রদত্ত হারাম এমন নিষিদ্ধ বিধান যা সুনিশ্চিতরূপে অকাট্ট দলীলের আলোকে প্রমাণিতো, যাতে বিন্দুমাত্র সংশয়ের অবোকাশ নেই। কেউ যদি হারামকে হালাল মনে করে তবে সে কাফের হয়ে যাবে। আর বিনা কারণে কেউ হারাম কাজে রতো হলে সে ফাসেক বলে বিবেচিতো হবে এবং পরকালে শাস্তির উপোযুক্ত হবে


*📚০৬) মাকরূহে তাহরিমীর সংজ্ঞা ও বিধান:📚


✅যে নিষিদ্ধ বিধান সুনিশ্চিত দলীলের আলোকে প্রমাণিতো নয়; বরং প্রবল ধারণাপ্রসূতো দলীলের ভিত্তিতে প্রমাণিতো তাকে মাকরূহে তাহরিমী বলা হয়। কার্যতো মকরুহে তাহরিমী হারাম বিধানের মতোই অবশ্য পরিত্যাজ্য। তবে এর অস্বীকার কারী কাফের সাব্যস্ত হবে না। যদি কেউ বিনা কারণে মাকরুহে তাহরিমী কাজে রতো হয় তবে সে ফাসেক হিসেবে সাব্যস্ত হবে এবং পরকালে শাস্তির উপোযুক্ত হবে


*📚০৭) মাকরূহে তানযিহীর সংজ্ঞা ও বিধান📚


✅আল্লাহ্ তা‘আলা যে কাজ থেকে অনাবশ্যক ভাবে নিবৃত্ত হওয়ার কামনা করেন তাকে মাকরূহে তানযিহী বলা হয়। মাকরূহে তানযিহী থেকে নিবৃত্ত হলে পূণ্য হবে। নিবৃত্ত না হলে গুনাহ হবে না।


*📚০৮) মুবাহ এর সংজ্ঞা ও বিধান:📚


 ✅শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে অনুমোদিতো কার্যক্রমকে মুবাহ বলা হয়। স্বাভাবিকভাবে এতে কোনো পূণ্য ও নেই গুনাহ ও নেই। তবে নিয়্যত ও উদ্দেশ্যের ব্যাবধানে পূণ্য ও গুনাহ হয়ে থাকে।


📚*[মু’জামুল মুস্তালাহাতিল ফিকহিয়্যা ৩/২০২, ৩৪৩, কামুসুলফিকহ ৩/২৪৭, ২৮৯, ৪/৪৫২, ৫/৮৯, ২৫৬, আলমাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ ১০/২০৫, ২০৬, ৩২/৯৫, ২৫/২৭৫, মু’জামুল ফকীহ ৩১৯]*🔚

Post a Comment

0 Comments