জিন ও শয়তানের মধ্যে পার্থক্য।Difference between Jeen and Saytan.




⁉*প্রশ্ন: জিন ও শয়তান কি একই না কি তাদের মাঝে পার্থক্য আছে⁉👇⬇👇 🌹🆗🌹


*উত্তর:* নিন্মে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে শয়তানের পরিচয়, প্রকারভেদ এবং জিন ও শয়তানের মাঝে পার্থক্য তুলে ধরা হলো:


😈*শয়তান কাকে বলে?*😈


👹শয়তান বলতে কী বুঝায় সে ব্যাপারে আলেমদের বক্তব্য তুলে ধরা হলো:


📘বিশিষ্ট ভাষাবিদ, ফিকাহ বিদ ও হাদিস বিদ আবু উবাইদ কাসেম বিন সাল্লাম 

[জন্ম: ১৫৭ হি:-২২৪ হি:] বলেন:


الشيطان كل عات متمرد من إنس, أو جن


“প্রত্যেক অবাধ্য ও সীমালঙ্ঘণকারীকে শয়তান বলা হয়।” (বাহরুল উলুম লিস সামারকান্দি ১/২৭৭)


📙আবু বকর মুহাম্মদ বিন ইসহাক [জন্ম ৮৫ হি:-মৃত্যু: ১৫১ হি;] বলেন:


إنما سمي شيطاناً لأنه شطن عن أمر ربه، والشطون البعيد النازح


“শয়তানকে এই জন্যই শয়তান বলা হয় যে, সে আল্লাহর নির্দেশ পালন থেকে দূরে থাকে। কেনোনা আরবিতে الشطون-শাতূন শব্দের অর্থ হলো, দূরে অবস্থানকারী ও পলাতক।” 

[আয যীনাহ ফিল কালিমাতুল ইসলামিয়্যাতিল আরাবিয়াহ ২/১৭৯]


✅কোনো কোনো আলেম বলেন: যে নিজে আল্লাহর অবাধ্যতা করে এবং নানা অন্যায়-অপকর্মে লিপ্ত থাকার পাশাপাশি অন্যকে আল্লাহর আনুগত্য করতে বাধা দেয় এবং দ্বীন ও কল্যাণের পথ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করে তাকেই ইসলামের পরিভাষায় শয়তান বলা হয়-চাই সে জিনের মধ্য থেকে হোক অথবা মানুষের মধ্য থেকে হোক।


👿*শয়তান দু প্রকার। যথা:*👿


*ক. জিন রূপী শয়তান।*


*◉ খ. মানুষ রূপী শয়তান।*


👿*জিন দু প্রকার। যথা:*👿


✴ক. ভালো, দ্বীনদার, আল্লাহ ভীরু, আল্লাহর আনুগত্যশীল ও সৎ কর্মপরায়ন জিন।


✳খ. খারাপ, ইবলিসের অনুসারী, অবাধ্য, সীমালঙ্ঘণকারী ও দুষ্কৃতিকারী জিন। এই দ্বিতীয় প্রকার হলো, জিন রূপী শয়তান।


👿*জিনদের মতো মানুষও ভালো ও মন্দ দু প্রকার।*👿


🌺মানুষের মধ্যেও যারা খারাপ, আল্লাহর অবাধ্য, ইবলিসের অনুসারী ও দুষ্কৃতিকারী তারা হলো, মানুষ রূপী শয়তান।


☝*আল্লাহ তাআলা বলেন:*☝


وَكَذَٰلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوًّا شَيَاطِينَ الْإِنسِ وَالْجِنِّ يُوحِي بَعْضُهُمْ إِلَىٰ بَعْضٍ زُخْرُفَ الْقَوْلِ غُرُورًا


“এমনিভাবে আমি প্রত্যেক নবীর জন্য মানুষ ও জিন শয়তাদেরকে শত্রু নির্ধারণ করে দিয়েছি। এরা একে অপরকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় কথাবার্তা শিখিয়ে দেয় যেনো তাদেরকে ধোঁকায় ফেলতে পারে ।” *(সূরা আনআম: ১১২) আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দুই প্রকার শয়তান থেকে আশ্রয় চাইতে বলেছেন।


☝*আল্লাহ তাআলা বলেন:*☝


الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ


“(আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি সেই শয়তান থেকে যে) কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে জিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে।” *(সূরা নাস: ৫ ও ৬)*


📚আবু উমামা (রাঃ) হতে বর্ণিতো, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন:


يا أبا ذر تعوذ بالله من شر شياطين الجن والإنس، قال: يا نبي الله، وهل للإنس شياطين؟ قال: نعم: ((شَيَاطِينَ الإِنسِ وَالْجِنِّ يُوحِي بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ زُخْرُفَ الْقَوْلِ غُرُورًا)) [الأنعام: 112]


“হে আবু যর, জিন ও মানুষ শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করো।”

তিনি বললেন: হে আল্লাহর নবী, মানুষের মধ্যেও কি শয়তান আছে? তিনি বললেন: হ্যাঁ। (তারপর এই আয়াতটি পাঠ করলেন):


شَيَاطِينَ الإِنسِ وَالْجِنِّ يُوحِي بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ زُخْرُفَ الْقَوْلِ غُرُورًا


“এমনিভাবে আমি প্রত্যেক নবীর জন্য মানুষ ও জিন শয়তাদেরকে শত্রু নির্ধারণ করে দিয়েছি। তারা একে অপরকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় কথাবার্তা শিখিয়ে দেয় যেনো তাদেরকে ধোঁকায় ফেলতে পারে।” *(সূরা আনআম: ১১২)


❇সুতরাং জিন রূপী হোক আর মানুষরূপী হোক-উভয় প্রকার শয়তান থেকে আমাদেরকে বাঁচতে হবে এবং আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে।


☝আল্লাহ আমাদেরকে হেফাজত করুন। (আমীন।)

Post a Comment

0 Comments