রমজানের ফজিলত পূর্ণ আমল সমূহ। The period of the Ramadan.

 রমযানের ফজিলত পূর্ণ আমল 

রমযানের ফজিলত পূর্ণ আমল


*রমজানের আমল*


১. রোযা: রমযান মাসে রোযা রাখা ফরয। এটা এ মাসের বিশেষ আমল। সকল আদব রক্ষা করে পুরো মাস রোযা রাখা প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য। (সূরা বাকারা : ১৮৩)


২. তারাবীহ: রমযানের রাতের বিশেষ আমল হলো কিয়ামে রমযান তথা বিশ রাকাত তারাবীহ। এ মাসের অফুরন্ত রহমত ও মাগফিরাত লাভ করার জন্য এবং প্রতিশ্রুত সওয়াব ও পুরস্কার পাওয়ার জন্য তারাবী নামাযের প্রভাব অপরিসীম। (আস সুনানুল কুবরা ৪৮০১)

রমযানের ফজিলত পূর্ণ আমল 

৩. দান করা: দান-সদকা সর্বাবস্থাতেই উৎকৃষ্ট আমল, কিন্তু রমযানে তার গুরুত্ব অনেক বেড়ে যায়। হাদীস শরীফে এসেছে- ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়ার সকল মানুষ অপেক্ষা অধিক দানশীল ছিলেন। রমযান মাসে তাঁর দানের হস্ত আরো প্রসারিতো হতো।’ (সহীহ বুখারী, হাদীস ১৯০২)


৪. কুরআন মাজীদ তেলাওয়াত: এ মাস কুরআন অবোতরণের মাস। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিবরীল (আঃ) -এর সাথে রমযানের প্রত্যেক রাতে কুরআন মজীদ একে অপরকে পড়ে শুনাতেন। হাদীস শরীফে এসেছে- ‘হযরত জিবরীল (আঃ) রমযানের শেষ পর্যন্ত প্রত্যেক রাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সাক্ষাত করতেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে কুরআন মজীদ শোনাতেন।’(সহীহ বুখারী, হাদীস ১৯০২)

রমযানের ফজিলত পূর্ণ আমল 

❇️অতঃএব আমাদের প্রত্যেকের উচিত রমযানে অধিক পরিমাণে কুরআন তেলাওয়াত করা। অন্ততো একবার হলেও কুরআন মাজীদ খতম করা। সালাফে সালেহীনের জীবনী আলোচনা করলে দেখা যায় যে, তাঁরা এবং তাদের পরিবারের সদস্যগণ প্রত্যেকে রমযানে বহুবার কুরআন মাজীদ খতম করতেন।


৫. নফল ইবাদত: এ মাসে শয়তান শৃংখলাবদ্ধ থাকে (সহীহ বুখারী ১৮৯৮)। এই সুযোগে অধিক পরিমাণে নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জন করা যায়। এ মাসে যে কোনো ইবাদত নিয়মিতো করতে তেমন কোনো বেগ পেতে হয় না এবং পরবর্তীতে তা সহজেই অভ্যাসে পরিণতো হয়। সুতরাং যিকির-আযকারের সঙ্গে অধিক পরিমাণে নফল নামায আদায় করা উচিত। অন্ততো বিভিন্ন সময়ের নফল নামাযগুলো আদায় কবা যেমন-ইশরাক, চাশত ও তাহাজ্জুদ ইত্যাদি।

রমযানের ফজিলত পূর্ণ আমল 

☪️রমযানে সাহরীতে উঠলেই দু’চার রাকাত তাহাজ্জুদ নামায সহজেই পড়া যায়। বছরের অন্য দিনের মতো কষ্ট করার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু আফসোসের বিষয় এই যে, অমনোযোগী হওয়ার ফলে কিংবা সাহরীতে অতি ভোজনের কারণে তাহাজ্জুদ আদায়ের সুযোগ হয়ে ওঠে না।


৬. দুআ করা: এ মাস রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও জান্নাত লাভের মাস। তাই বেশি বেশি আল্লাহ তাআলার শরণাপন্ন হয়ে কান্না-কাটি করে দুআ করা একান্ত কাম্য।


৭. মাগফিরাত কামনা করা: যে ব্যাক্তি রমযান পেয়েও স্বীয় গুনাহসমূহ ক্ষমা করাতে পারলো না তার উপর জিবরীল (আঃ) ও দয়ার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন (মুসতাদরাকে হাকেম ৭৩৩৮)। তাই জীবনের কৃতো গুনাহের কথা স্মরণ করে বেশি বেশি তওবা ইস্তেগফার করা এবং আল্লাহ তাআলার দরবারে ক্ষমা মঞ্জুর করিয়ে নেওয়ার এটিই উত্তম সময়। বিশেষ করে ইফতার ও তাহাজ্জুদের সময় আল্লাহ তাআলার দরবারে ক্ষমা চাওয়া এবং দুআ করা উচিত।

রমযানের ফজিলত পূর্ণ আমল 

৮. ই’তিকাফ: শেষ দশকের মাসনূন ই’তিকাফ অত্যন্ত ফযীলতের আমল। হাদীস শরীফে এসেছে- ‘নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের শেষ দশদিন ইতিকাফ করতেন।’ (সহীহ বুখারী, হাদীস ২০২১; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৭১)


৯. শবে কদর অন্বেষণ: ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে রাত্রি জাগরণ করে সহস্র মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ও উত্তম রাত-লাইলাতুল কদর তালাশ করা কর্তব্য। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে- ‘নিঃসন্দেহে কদরের রাতে আমি কুরআন অবোতীর্ণ করেছি। আর আপনি কি জানেন শবে কদর কী? শবে কদর হলো এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। এ রাতে ফেরেশতা ও রুহুল কুদ্স (জিবরাঈল আঃ) তাদের পালনকর্তার আদেশক্রমে প্রত্যেক মঙ্গলময় বস্তু নিয়ে (পৃথিবীতে) অবোতরণ করে। (এ রাতের) পুরোটাই শান্তি যা ফজর হওয়া পর্যন্ত অব্যাহতো থাকে।’ (সূরা কদর)🔚

রমযানের ফজিলত পূর্ণ আমল 

Post a Comment

0 Comments